ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

চেক জালিয়াতিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করায় বাদীকে বাড়ী ছাড়া করার হুমকির প্রতিবাদ ও বালিয়াডাঙ্গীতে বেলাল উদ্দীন নামে এক দাদন ব্যবসায়ীর মিথ্যা মামলা ও ভয়ভীতি থেকে রক্ষা পেতে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভুক্তভোগী স্ব-পরিবারে আত্মহত্যার হুমকি প্রদান করেছে।

 

বুধবার দুপুর ১২টায় বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ হুমকি প্রদান করেন এবং সেখানে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন উপজেলার চাড়োল ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের কসির উদ্দীনের ছেলে বেলাল উদ্দীন।

 

অপরদিকে বাদীকে হুমকি প্রদানকারী বেলাল উদ্দীন উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের ইক্ষু সেন্টারপাড়া এলাকার বাবর আলীর ছেলে ও বালিয়াডাঙ্গী গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা।

 

স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী বেলাল উদ্দীন বলেন, ৪ লক্ষ টাকা জামানতের বিনিময়ে বালিয়াডাঙ্গী গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতিতে নিয়োগ পেয়ে ৮ বছর কর্মরত ছিলাম। সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পরিশোধের কথা বলে আমার নিকট থেকে ১০ পাতার একটি চেক জমা নেয় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা বেলাল উদ্দীন। পরে আমি চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলে আমার কাছ থেকে হিসাব-নিকাশ চূড়ান্ত করে। কিছুদিন পর জানতে পারি যে, আমার জমা দেওয়া চেকের পাতা ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে আদালতে ৪৩ লক্ষ টাকার চেক জালিয়াতির ৩টি মামলা দিয়েছে।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, চেকের মামলাগুলো মিথ্যা উল্লেখ করে বালিয়াডাঙ্গী থানায় ও দিনাজপুর দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করি। তবে সে অভিযোগের কোন ফল না পেয়ে ঠাকুরগাঁও সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা দায়ের করি। সেখানে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে দিনাজপুর দুদককে তদন্ত করে আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। দুদকে মামলার খবর পেয়ে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা বেলাল ও তার লোকজন গত ১৯ সেপ্টেম্বর আমার বাড়ীতে রাতের আধারে পুরো পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমি বর্তমানে প্রাণভয়ে স্ব-পরিবারে শ্বশুড়বাড়ীতে অবস্থান করছি। এত টাকার মামলা থেকে নিস্তার না পেলে স্ব-পরিবারে আত্মহত্যা করবো। এছাড়া আর কোন রাস্তা আমার নেই।

 

ভুক্তভোগী বেলাল উদ্দীন সংবাদ সম্মেলনের বিজ্ঞপিতে উল্লেখ করেন, বালিয়াডাঙ্গী গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা বেলাল উদ্দীন একজন চড়া মাপের দাদন ব্যবসায়ী। তিনি এলাকায় প্রায় শতাধিক লোকজনের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা করেছেন। শুধু তাই নয় তার সুদের টাকা না দিতে পেরে বালিয়াডাঙ্গীস্থ ইশিতা হোটেলের মালিক ও ওয়াপদা মসজিদের ইমাম হাফেজ সাইফুল্লাহ বাড়ী ছেড়ে পালিয়েছেন। এছাড়াও অসংখ্য মানুষের বাড়ী দখল নিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন।

 

তবে সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে বালিয়াডাঙ্গী গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা বেলাল উদ্দীন মুঠোফোনে বলেন, সমিতির নামে কোন অভিযোগ সে করেনি। আমার বিরুদ্ধে দুটো মামলা করেছিল। মামলা দুটো খারিজ করে দিয়েছে আদালত। দুদকে মামলা হয়েছে এ বিষয়টা আমি এখনও জানিনা। তার প্রতিষ্ঠানকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানান তিনি।

 

সংবাদ সম্মেলনে বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি রমজান আলী, ঠাকুরগাঁও রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ লিটু, ভুক্তভোগী বেলাল সহ তার স্ত্রী, অবুঝ দুটি শিশু সন্তান, স্যালকসহ সহ স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।